বিরাম চিহ্ন বা যদি চিহ্ন বা ছেদ চিহ্ন
বিরাম চিহ্ন বা যদি চিহ্ন বা ছেদ চিহ্ন
বিরাম চিহ্ন: বাক্যের অর্থ সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করার জন্য বাক্য উচ্চারনের সময় বাক্যের মাঝে ও শেষে বিরতি দিতে হয়। এই বিরতির পরিমান প্রয়োজন অনুযায়ী কম বা বেশি হয়ে থাকে। আবার বাক্য উচ্চারনের সময় বিভিন্ন আবেগের জন্যে উচ্চারণ বিভিন্ন হয়ে থাকে। বাক্যটি লেখার সময় এই বিরতি ও আবেগের ভিন্নতা প্রকাশ করার জন্য যে চিহ্নগুলে ব্যবহার করা হয় তাদের কে যদি বা বিরাম চিহ্ন বলে।
প্রাচীন বাংলায় মাত্র দুইটি বিরাম চিহ্ন ব্যবহার করা হতো, দাঁড়ি (।) ও দুই দাঁড়ি (॥)। পরবর্তীতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ইংরেজি ভাষার অনুকরণে বাংলায় আরো অনেকগুলো বিরাম চিহ্ন প্রচলন করেন। বর্তমানে ব্যবহৃত বিরাম চিহ্নগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিরাম চিহ্ন নিচে দেয়া হলো-
১)
দাঁড়ি---------- ।
(১সেকেন্ড
বিরতিকাল)
২)
দুই দাঁড়ি------ (।।) (১সেঃ
বি)
৩)
কমা ------------( ,
) (১বলতে
যে সময় প্রোয়জন)
৪)
সেমিকোলন---( ; ) (১বলার
২গুন)
৫)
কোলন--------( : ) ( ১সেঃ
বিঃ)
৬ )কোলন ড্যাস --( :- ) ( ১
সেঃ)
৭)প্র শ্ন চিহ্ন-------(?) (১সেঃ)
৮)
বিস্ময় চিহ্ন----- ( ! ) (১সেঃ)
৯ )ড্যাস----------- ( _ ) (১সেঃ)
১০ )হাইফেন------ (- ) থামার
প্রোয়জন নেই
১১)
উর্ধ্বকমা------( ' )
বিকল্প
চিহ্ন(/) একবিন্দু
(১২) ত্রিবিন্দু--------
(...) থামার
প্রোয়জন নেই।
(১৩ )জোড় চিহ্ন -----( '' '') ১বলতে
যে সময়।
() বন্ধনী থাকলে থামার প্রোয়জন নেই।
কমা ,
প্রতিটি বাক্যের শেষে দারি ব্যবহৃত হয়। দাড়ি দিয়ে বাক্যটি শেষ হয়েছে বুঝায়।
যেমন, আমি শুয়ে আছি।
প্রশ্নবোধক চিহ্ন(? )
কোন বাক্যদ্বারা প্রশ্ন করা হলে তার শেষে প্রশ্নবেধক ? চিহ্ন বসে।
যেমন,তোমার নাম কি?
বিষ্ময়সূচক বা আশ্চর্যবোধক চিহ্ন (! )
কোলন (:)
একটি অপূর্ণ বাক্যের পর অন্য একটি বাক্য লিখতে হলে কোলন ব্যবহৃত হয়। যেমন: সভায় ঠিক করা হলো:এক মাস পর আবার সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ড্যাস -
যৌগিক ও মিশ্র বাক্যে দুই বা তারচেয়েও বেশি পৃথক বাক্য লেখার সময় তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে ড্যাস চিহ্ন ব্যবহার করা যায়। যেমন-
তোমরা দরিদ্রের উপকার কর- এতে তোমাদের সম্মান যাবে না- বাড়বে।
কোনো কথার দৃষ্টান্ত বা বিস্তার বোঝাতে ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহৃত হয়
বাক্য অসম্পূর্ণ থাকলে বাক্যের শেষে ড্যাশ চিহ্ন বসে
গল্পে উপন্যাসে প্রসঙ্গের পরিবর্তন বা ব্যাখ্যায় ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহৃত হয়
নাটক বা গল্প-উপন্যাসে সংলাপের আগেও ড্যাশ চিহ্ন বসে
কোলন ড্যাস (:-)
উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত প্রয়োগের জন্য কোলন ড্যাস ব্যবহৃত হয়। যেমন-
পদ পাঁচ প্রকার :- বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া।
হাইফেন বা সংযোগ চিহ্ন (- )
সমাসবদ্ধ পদের অংশগুলো বিচ্ছিন্ন করে দেখানোর জন্য হাইফেন ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ, দুইটি পদ একসঙ্গে লিখতে গেলে হাইফেন দিয়ে লিখতে হয়।
যেমন-সুখ-দুঃখ, মা-বাবা।
কোন বর্ণ লোপ করে বা বাদ দিয়ে সংক্ষিপ্ত উচ্চারণ বোঝাতে ইলেক বা লোপ চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। কবিতা বা অন্যান্য সাহিত্যে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
উদ্ধরণ চিহ্ন
বক্তার কথা হুবুহু উদ্ধৃত করলে সেটিকে এই চিহ্নের মধ্যে রাখতে হয়। অর্থাৎ, প্রত্যক্ষ উক্তিকে এই চিহ্নের মধ্যে রেখে লিখতে হয়। যেমন-
ফিদেল ক্যাস্ত্রো বলেছেন, ‘জন্মভূমি অথবা মৃত্যু’।
ব্র্যাকেট বা বন্ধনী চিহ্ন ( ).{ }. [ ]
বিরাম চিহ্নের ব্যবহার
কমা ,
বাক্য সুস্পষ্টকরতে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে প্রতিটি ভাগের মাঝে কমা বসে।।যেমন, সুখ চাও, সুখ পাবে, বই পড়।
সম্মোধনের পরে কমা বসে।যেমন, রাকিব, এদিকে এসে।
কোন বাক্যে উদ্ধৃতি থাকলে, তার আগের খন্ডবাক্যের শেষে কমা (,) বসে। যেমন- আহমদ ছফা বলেন, ‘মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ।’ তুমি বললে, ‘আমি কালকে আবার আসবো।’
মাসের তারিখ লেখার সময় বার ও মাসের পর কমা বসে। যেমন- ২৫ বৈশাখ, ১৪১৮, বুধবার।
ঠিকানা লেখার সময় বাড়ির নাম্বার বা রাস্তার নামের পর কমা বসে। যেমন- ৬৮, নবাবপুর রোড, ঢাকা- ১০০০।
ডিগ্রী পদবি লেখার সময় কমা ব্যবহৃত হয়। যেমন- ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক, এম,এ, পি-এইচ,ডি।
জটিল বাক্যের প্রত্যেকটি খন্ডবাক্যের পরে কমা বসে। যেমন- যে পরিশ্রম করে, সেই সুখ লাভ করে।
সেমিকোলন (;)
কমার চেয়ে বেশি কিন্তু দারির চেয়ে কম বিীতি দেবার জন্য সেমিকোলন ব্যবহৃত হয়।
এক ধরনের বাক্যন্তর্গত চিহ্ন ।
কমার চেয়ে বেশি কিন্তু দারির চেয়ে কম বিীতি দেবার জন্য সেমিকোলন ব্যবহৃত হয়।
এক ধরনের বাক্যন্তর্গত চিহ্ন ।
একাধিক
স্বাধীন বাক্যকে একটি বাক্যে লিখলে সেগুলোর মাঝখানে সেমিকোলন বসে
বক্তব্য
স্পষ্ট করার জন্য সমজাতীয় বাক্য পাশাপাশি প্রতিস্থাপন করলে সেমিকোলন বসে
দারি বা পূর্নছপদ (।)
প্রতিটি বাক্যের শেষে দারি ব্যবহৃত হয়। দাড়ি দিয়ে বাক্যটি শেষ হয়েছে বুঝায়।
যেমন, আমি শুয়ে আছি।
প্রশ্নবোধক চিহ্ন(? )
কোন বাক্যদ্বারা প্রশ্ন করা হলে তার শেষে প্রশ্নবেধক ? চিহ্ন বসে।
যেমন,তোমার নাম কি?
বিষ্ময়সূচক বা আশ্চর্যবোধক চিহ্ন (! )
বিস্মিত হওয়ার অনুভূতি প্রকাশের জন্য কিংবা অন্য কোন হৃদয়ানুভূতি প্রকাশের জন্য এই চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যেমন-
আহা! কী চমৎকার দৃশ্য।
ছি! তুমি এত খারাপ।
হুররে! আমরা খেলায় জিতেছি।
কোলন (:)
একটি অপূর্ণ বাক্যের পর অন্য একটি বাক্য লিখতে হলে কোলন ব্যবহৃত হয়। যেমন: সভায় ঠিক করা হলো:এক মাস পর আবার সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ড্যাস -
যৌগিক ও মিশ্র বাক্যে দুই বা তারচেয়েও বেশি পৃথক বাক্য লেখার সময় তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে ড্যাস চিহ্ন ব্যবহার করা যায়। যেমন-
তোমরা দরিদ্রের উপকার কর- এতে তোমাদের সম্মান যাবে না- বাড়বে।
কোনো কথার দৃষ্টান্ত বা বিস্তার বোঝাতে ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহৃত হয়
বাক্য অসম্পূর্ণ থাকলে বাক্যের শেষে ড্যাশ চিহ্ন বসে
গল্পে উপন্যাসে প্রসঙ্গের পরিবর্তন বা ব্যাখ্যায় ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহৃত হয়
নাটক বা গল্প-উপন্যাসে সংলাপের আগেও ড্যাশ চিহ্ন বসে
কোলন ড্যাস (:-)
উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত প্রয়োগের জন্য কোলন ড্যাস ব্যবহৃত হয়। যেমন-
পদ পাঁচ প্রকার :- বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া।
সমাসবদ্ধ পদের অংশগুলো বিচ্ছিন্ন করে দেখানোর জন্য হাইফেন ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ, দুইটি পদ একসঙ্গে লিখতে গেলে হাইফেন দিয়ে লিখতে হয়।
যেমন-সুখ-দুঃখ, মা-বাবা।
ইলেক বা লোপ চিহ্ন '
কোন বর্ণ লোপ করে বা বাদ দিয়ে সংক্ষিপ্ত উচ্চারণ বোঝাতে ইলেক বা লোপ চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। কবিতা বা অন্যান্য সাহিত্যে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
যেমন-
মাথার ’পরে জ্বলছে রবি। (’পরে= ওপরে)
উদ্ধরণ চিহ্ন
বক্তার কথা হুবুহু উদ্ধৃত করলে সেটিকে এই চিহ্নের মধ্যে রাখতে হয়। অর্থাৎ, প্রত্যক্ষ উক্তিকে এই চিহ্নের মধ্যে রেখে লিখতে হয়। যেমন-
ফিদেল ক্যাস্ত্রো বলেছেন, ‘জন্মভূমি অথবা মৃত্যু’।
ব্র্যাকেট বা বন্ধনী চিহ্ন ( ).{ }. [ ]
গণিতশাস্ত্রে এই তিনটির আলাদা গুরচত্ব থাকলেও ভাষার ক্ষেত্রে এদের আলাদা কোন গুরচত্ব নেই। তবে সাহিত্যে ও রচনায় ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য প্রথম বন্ধনী ব্যবহার করা হয়। যেমন-
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর রমনার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) পাকিস্তান বাংলাদেশের কাছে পরাজয় মেনে দলিলে স্বাক্ষর করে।
No comments